“সাবেক পুলিশপ্রধানের বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি: র‌্যাবের গোপন অভিযান নিয়ন্ত্রণ করতো প্রধানমন্ত্রীর দফতর”

সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আদালতে জানান, র‌্যাবের বিশেষ অভিযান ও রাজনৈতিক কর্মসূচি মোকাবিলার সিদ্ধান্ত সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আসত। তার জবানবন্দি দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্বাধীনতা নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে।

Sep 2, 2025 - 15:38
 0  7
“সাবেক পুলিশপ্রধানের বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি: র‌্যাবের গোপন অভিযান নিয়ন্ত্রণ করতো প্রধানমন্ত্রীর দফতর”

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এক সাক্ষ্য দিতে গিয়ে সাবেক পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন, যা রাষ্ট্র পরিচালনার অন্তরালে থাকা নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

তার বক্তব্যে উঠে এসেছে, র‌্যাবের বহু গুরুত্বপূর্ণ অভিযান—যেখানে কাউকে আটক, জিজ্ঞাসাবাদ কিংবা হত্যা করা হয়েছে—সব সিদ্ধান্তই আসত প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে। নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকীর মাধ্যমে এই নির্দেশ মাঠপর্যায়ে পৌঁছাতো।

শুধু তাই নয়, তিনি দাবি করেছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেই ব্যালট বাক্সে অর্ধেক ভোট আগাম ভরার পরিকল্পনা হয়েছিল, যার দায়িত্ব দেওয়া হয় কিছু পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে। পরবর্তীতে এই কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সংশ্লিষ্টদের রাষ্ট্রীয় পদকও দেওয়া হয়।

এছাড়া তিনি স্বীকার করেন, ২০১৪ সালের পর থেকেই পুলিশ বাহিনীর ভেতর রাজনৈতিক বিভাজন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিশেষ করে নির্দিষ্ট জেলা ও অঞ্চলের কর্মকর্তাদের নিয়ে গ্রুপ তৈরি হয়, যা বাহিনীর অভ্যন্তরে ঐক্য নষ্ট করে দেয়। তার অবসরের সময় ঘনিয়ে এলেও এই বিভাজন ঠেকাতে তার মেয়াদ দীর্ঘায়িত করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।

জুলাই–আগস্টের আন্দোলনের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় নিয়মিত বৈঠকের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন সাবেক আইজিপি। প্রতিরাতের বৈঠকে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা বসে আন্দোলন দমনের কৌশল ঠিক করতেন। এক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের আটক করা হয়, এবং পরে তাদের ওপর ভয়ভীতি ও মানসিক চাপ প্রয়োগ করা হয়।

তিনি বলেন, এই পদক্ষেপগুলো ছিল সরাসরি রাজনৈতিক নির্দেশের অংশ, যদিও তিনি নিজে ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন। তবুও সরকারি নির্দেশ মেনে অভিযান চলেছে।

🔎 সারসংক্ষেপ

সাবেক আইজিপির এই স্বীকারোক্তি ইঙ্গিত করছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় স্বাধীনভাবে কাজ করেনি; বরং উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক প্রভাবেই বহু সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। এই বক্তব্য নতুন করে প্রশ্ন তুলছে—বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কতটা নিরপেক্ষ, আর গণতন্ত্র কতটা নিরাপদ?

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0